আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে॥
আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,
তোমার এই দেবলয়ের প্রদীপ করো-
নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে॥
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর॥
মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে,
বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে॥
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে॥
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে,
মন মোর মেঘের সঙ্গী,
উড়ে চলে দিগ্ দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীতে
রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম।
চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে-
নিয়ো না, নিয়ো না সরায়ে।
জীবন মরণ সুখ দুখ দিয়ে
বক্ষে ধরিব জড়ায়ে।
একটুকু ছোঁওয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি-
তাই দিয়ে মনে মনে রচি মম ফাল্গুনী॥
আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী।
তুমি থাক সিন্ধুপারে ওগো বিদেশিনী॥
কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে, তোমারে দেখিতে দেয় না?
মোহমেঘে তোমারে দেখিতে দেয় না।
অন্ধ করে রাখে, তোমারে দেখিতে দেয় না।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?
তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম
নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশীথিনী-সম॥
মম জীবন যৌবন মম অখিল ভুবন
তুমি ভরিবে গৌরবে নিশীথিনী-সম॥